Curcumin in Raw Turmeric: Wonderful Health Booster

 

         কাঁচা হলুদে কারকিউমিন: অপূর্ব স্বাস্থ্য বর্ধক গুণ

       [Curcumin in Raw Turmeric: Wonderful Health Booster]

কাঁচা হলুদ প্রায় ৪০০০ বছর ধরে ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। হলুদের উপকারিতা নিয়ে বর্তমানে বিশ্বের উন্নত দেশগুলিতে  অনেক গবেষণা হচ্ছে। গবেষকরা দেখেছেন হলুদ অনেক রোগ নিরাময় বা প্রতিহত করতে সক্ষম আর সেই কারনে উন্নত দেশ গুলিতে ওষুধ হিসাবে হলুদের ব্যবহার অনেক বেড়ে গেছে।



হলুদের একটি সূক্ষ্ম জৈব সক্রিয় উপাদান এর নাম “কারকিউমিন যাহা হলুদের মূল উপাদান।এই উপাদানের কারণেই হলুদের রং এমন হলুদ হয়। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে বিজ্ঞানীরা হলুদের মধ্যে যে কারকিউমিন আছে তা আবিষ্কার করেন। ১৯৪৯ সালে বিজ্ঞানীরা প্রথম আবিষ্কার করেন।কারকিউমিনের  ব্যাকটেরিয়া রোধী প্রভাব।পরবর্তী গবেষণায় জানা যায় যে এটিতে প্রদাহরোধী, অ্যান্টি-অক্সিডেন্টঅ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি  এবং অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কার্যকারিতা রয়েছে।

হলুদ(Curcuma longa)প্রতি ১০০গ্রাম এর পুষ্টিমান-

  (Source: USDA National Nutrient data base)

বিবরন

পুস্টিমান

শক্তি

৩৫৪ কিঃক্যালরী

কার্বোহাইড্রেট

৬৪.৯ গ্রাম

প্রোটিন

৭.৮৩ গ্রাম

মোট ফ্যাট

৯.৮৮  গ্রাম

কোলেস্টরেল

০.০

ডায়েটারি ফাইবার

২১ গ্রাম

ফোলেট/ভিটামিন বি-৯

৩৯ মাইক্রোগ্রা

নিয়াসিন/ভিটামিন বি-৩

৫.১৪০ মিঃগ্রাম

পাইরিডক্সিন ভিটামিন বি-৬

১.৮০ মিলিগ্রাম

রিবোফ্লাভিন

০.২৩৩ মিলিগ্রাম

ভিটামিন-সি

২৫.৯ মিলিগ্রাম

ভিটামিন-ই

৩.১০ মিলিগ্রাম

ভিটামিন-কে

১৩.৪ মাইক্রোগ্রাম

সোডিয়াম

৩৮ মিলিগ্রাম

পটাসিয়াম

২৫২৫ মিলিগ্রাম

ক্যালসিয়াম

১৮৩ মিলিগ্রাম

তামা

৬০৩ মাইক্রোগ্রাম

আয়রন

৪১.৪২ মিলিগ্রাম

ম্যাগনেসিয়াম

১৯৩ মিলিগ্রাম

ম্যাঙ্গানিজ

৭.৮৩ মিলিগ্রাম

ফসফরাস

২৬৮ মিলিগ্রাম

দস্তা

৪.৩৫ মিলিগ্রাম

 

 


গুনাগুনঃ 🔎

১। কাঁচা হলুদ চুলের জন্যখুশকির সমস্যা ও চুল পড়ার সমস্যায় কাজ করে।

২। কাঁচা হলুদ মাথা ব্যথায়- সাইনাসের সমস্যা ও অন্যান্য মাথাধরা ও মাথাব্যথা থেকে মুক্তি দেয়।

৩। কাঁচা হলুদ ওজন কমাতে- কাঁচা হলুদের অ্যান্টি-ওবেসিটি প্রপার্টি থাকায় নিয়ম করে কাঁচা হলুদ খেলে তা শরীরে মেদ জমতে বাধা দেয় ও মেটাবলিজমের হার বাড়ায়।

৪। কাঁচা হলুদ (কারকিউমিন) ট্রমাটিক ডিসঅর্ডার কমাতে- সমস্ত খারাপ, ভীতি জনক স্মৃতি স্ট্রেস   বা চাপ, উদ্বেগ, বিষণ্ণ মনমরা ভাব, বদমেজাজ, ডিপ্রেশন থেকে আমাদের মুক্তি দেয়।

৫। কাঁচা হলুদ অনিদ্রা দূর করতে-কাঁচা হলুদে মেশানো দুধ অ্যামাইনো অ্যাসিড ও ট্রিপটোফ্যান উৎপন্ন করে যা অনিদ্রা রোগের শান্তি পূর্ণ ঘুমে সাহায্য করে।

৬। কাঁচা হলুদ অ্যালজাইমার্স রোগে-সারা পৃথিবীতেই এখন মারাত্মক রোগের আকার ধারণ করেছে- “অ্যালজাইমার্স”। কারকিউমিন অ্যালজাইমার্স এর চিকিৎসায় সাহায্য করে। কারকিউমিনের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট গুণ স্মৃতিকে রক্ষা করার ক্ষমতা অ্যালজাইমারের চিকিৎসায় কাজে লাগে। দেখা গেছে নিয়ম করে কাঁচা হলুদ খেলে তা এই রোগের সম্ভাবনাকে অনেকটাই কমিয়ে দেয়।

৭। কাঁচা হলুদ মস্তিস্কের বয়স জনিত সমস্যাতে ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে-এতে থাকা কারকিউমিন মস্তিস্কে রক্ত চলাচলকে স্বাভাবিক রাখে ও বয়স জনিত সমস্যা থেকে মস্তিষ্ককে রক্ষা করে। ‘মুড’ ঠিক রাখতে ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে নিয়ম করে কাঁচা হলুদ খেলে উপকার হয়।

৮। কাঁচা হলুদ সর্দি কাশিতেহলুদে থাকা কারকিউমিন ইনফ্লুয়েঞ্জা, সর্দি কাশি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া কাঁচা হলুদ আমাদের শরীরের ইমিউনিটিকে বাড়িয়ে ও সর্দিকাশি থেকে আরাম দেয়। এতে থাকা ভিটামিন সি- ও সর্দি কাশি কমাতে সাহায্য করে, শ্বাসনালীর পথে থাকা বাধাকে দূর করে ও শ্বাস নেবার ক্ষমতা বাড়ায়।

৯। কাঁচা হলুদ ব্রণ কমাতে- কাঁচা হলুদের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ মুখে ব্রণ কমায়। এর থেকে মুক্তি পাবার জন্য মুখে নিয়ম করে কাঁচা হলুদ পেস্ট করে মুখে মাখুন ও সেবন করুন।

১০। কাঁচা হলুদ ক্ষত সারাতে- এর অ্যান্টি-বায়োটিক ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ বিভিন্ন ক্ষত তাড়াতাড়ি সারাতে সহায়তা করে ও ক্ষতের জায়গায় নতুন চামড়া জন্মাতে সাহায্য করে। অপারেশনের পরে ব্যথা কমাতে ও পোড়ার ক্ষত কমাতে কাঁচা হলুদ সাহায্য করে।

১১। কাঁচা হলুদ দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে-দাঁতের ওপরে থাকা এনামেলের আস্তরণকে রক্ষা করে ও দাঁতের ক্ষয় থেকে বাঁচায়।হলুদের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণাবলী থাকায় তা জীবাণুকে থেকে দাঁতকে রক্ষা করে। তাই অনেক সময় বিভিন্ন টুথপেস্টে হলুদকে আবশ্যকীয় উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়।মাড়ি থেকে রক্তপড়া কমাতেও মুখের ভেতরে ক্ষত সারাতে কাঁচা হলুদ নিয়ম করে খেতে পারেন।

১২। কাঁচা  হলুদ- কারকিউমিন-ত্বকের বয়স কমাতে- হলুদে থাকা কারকিউমিনের  অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট গুণ ত্বককে বয়সের ছাপ থেকে বাঁচায়। বহু প্রাচীনকাল থেকেই ত্বকের  ঔজ্জ্বল্য রক্ষা ও  ত্বকের বয়স কমাতে হলুদ ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই কারনেই বিভিন্ন ক্রিমের প্রয়োজনীয়  উপাদান  হিসেবে হলুদকে ব্যবহার করা হয়। ত্বকের বিভিন্ন দাগ, রিঙ্কল ও সান ট্যান  থেকে ত্বককে  রক্ষা করার  জন্য কাঁচা হলুদের পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগালে উপকার পাবেন।

১৩। কাঁচা হলুদ স্ট্রোকের পরে- কাঁচা হলুদের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ও অ্যান্টি- ইনফ্লেমেটরি গুণ  স্ট্রোকের পরবর্তী চিকিৎসাতে অনেক উপকার দেয়।  নিয়ম করে কাঁচা হলুদ খাওয়া  আমাদের স্ট্রোকের  সম্ভাবনাকে কমিয়ে দিতে পারে এবং হার্টকেও বিভিন্ন ক্ষতির হাত   থেকে রক্ষা করে। এছাড়া কাঁচা  হলুদ  অপারেশনের পরে যে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা  থাকে, তা কমাতে সাহায্য করে।

১৪। কাঁচা হলুদ বা কারকিউমিন ডায়াবেটিসে- কাঁচা হলুদ ইনসুলিন হরমোনের ক্রিয়াকে  নিয়ন্ত্রণ  করে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে ও অগ্ন্যাশয়কে সুস্থ রাখে। হলুদ ও হলুদে থাকা কারকিউমিন  অ্যান্টি-ডায়াবেটিক এজেন্ট হিসেবে কাজ করে ও রক্তে শর্করার মাত্রা   কমাতে সাহায্য করে।

১৫। কাঁচা হলুদ থাইরয়েড এর হাত থেকে বাঁচতে- নিয়ম করে কাঁচা হলুদ গুড়া/ ক্যাপস্যুল, ট্যাবলেট খাওয়া আমাদের গলগণ্ড রোগের সম্ভাবনাকে কমিয়ে দেয়। এছাড়া থাইরয়েডের প্রদাহ থেকে বাঁচতে হলুদে থাকা কারকিউমিন আমাদের সাহায্য করে।

১৬। কাঁচা হলুদ বা কারকিউমিন হেপাটাইটিসে- হেপাটাইটিসের ফলে আমাদের যকৃতের প্রদাহ হয়। কাঁচা হলুদের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি  ও অ্যান্টি-ভাইরাল গুণ হেপাটাইটিসের সময় যকৃতের প্রদাহ থেকে আমাদের বাঁচায়। এছাড়া হেপাটাইটিস ভাইরাসের থেকে ও হলুদ আমাদের রক্ষা করে। কাঁচা হলুদ নিয়ম করে খেলে তা যকৃতকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে ও যকৃতের স্বাভাবিক কাজকে বজায় রাখতে সাহায্য করে।

 ১৭। কাঁচা হলুদ বা কারকিউমিন খাদ্য সংক্রমণ থেকে বাঁচায়- হলুদে থাকা  কারকিউমিনের  অ্যান্টি- ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট  উপাদান  থাকায় তা  বিভিন্ন  ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ  থেকে  খাদ্যনালীকে বাঁচায়। আমরা রোজ যে খাবার খাই, তার মধ্যে  অনেক সময়ই নানা জীবাণু  থেকে  যেতে  পারে, খাবারে কাঁচা হলুদ বা  হলুদ গুঁড়ো ব্যবহার  করলে তা খাদ্যনালীকে  ক্ষতিকারক  জীবাণুর   সংক্রমণ  থেকে বাঁচায় ও খাদ্যনালীর প্রদাহের  সম্ভাবনা কমায়।

১৮। কাঁচা হলুদ বা কারকিউমিন খাদ্য পরিপাকে- কাঁচা হলুদের মধ্যে গ্যাস্ট্রো- প্রটেক্টিভ  কিছু  গুণ  থাকে যা খাদ্য  পরিপাকে সাহায্য করে।ফলে হজমের  গোলমাল,গ্যাসের  সমস্যার  ক্ষেত্রে কাঁচা  হলুদ  খুবই  উপকার দেয়।

১৯ কাঁচা হলুদ বা কারকিউমিন অগ্ন্যাশয়কে সুস্থ রাখেকাঁচা হলুদে থাকা কারকিউমিন  ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ অগ্ন্যাশয়কে সুস্থ রাখে ও প্রদাহের হাত থেকে অগ্ন্যাশয়কে রক্ষা করে। নিয়ম করে কাঁচা হলুদ খেলে অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার থেকেও মুক্তি মিলে।

২০। কাঁচা হলুদ রক্ত চাপ কমাতে-কাঁচা হলুদে থাকা কারকিউমিন আমাদের রক্তনালীকে উন্মুক্ত করে, রক্তকে পাতলা করে ও রক্ত চলাচলের বাধাকে দূর করে ফলে রক্তচাপ কমে।

২১। কাঁচা হলুদ রক্তকে পরিশুদ্ধ রাখতে,ক্যান্সার দূর করতে- রক্তকে পরিশুদ্ধ রাখতে সাহায্য করে ও রক্তকে পরিষ্কার রাখে। কাঁচা হলুদে থাকা কারকিউমিন ক্যান্সার  দূর করতে  সহায়তা  করে। কারকিউমিন ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি বন্ধ করে ও তার মৃত্যু ঘটায়।  ফলে  ক্যান্সারের সম্ভাবনা হ্রাস পায়। বিভিন্ন স্টাডি  থেকে জানা গেছে প্রায় ৫৬ রকম ক্যান্সারের  সম্ভাবনা  কাঁচা হলুদ রোজ  নিয়মিত  খেলে  কমে।

২২। কাঁচা হলুদ যকৃত ঠিক রাখতে- কাঁচা হলুদ নিয়ম করে সেবনে যকৃত প্রদাহ থেকে সুস্থ থাকে ও গলব্লাডারের কাজ ও সঠিক ভাবে হয়।

 ২৩। কাঁচা হলুদ মেনোপজের সময়ে- হলুদ এ ফাইটো-ইস্ট্রোজেন বা ইস্ট্রোজেন হরমোন আছে। ইস্ট্রোজেন মেয়েদের দেহে থাকা একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হরমোন। কাঁচা হলুদের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট গুণ ডিপ্রেশন কাটানোর ক্ষমতা মেনোপজের সময় নানা ভাবে সাহায্য করে, পিরিয়ডসের আগে বা পিরিয়ডসের সময় তলপেটে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে এবং মেয়েদের প্রেগন্যান্সিতে  সাহায্য করে।এছাড়া পলি-সিস্টিক ওভারি থাকলেও কাঁচা হলুদ নিয়ম করে খেতে পারেন।

২৪। কাঁচা হলুদ (কারকিউমিন) হাড় জোড়া লাগাতে-বহু প্রাচীনকাল থেকেই কাঁচা হলুদকে হাড়ের নানারকম রোগের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। হলুদের  অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ ব্যথা,  প্রদাহকে কমায় এবং  হাড়ের টিস্যু গুলিকে রক্ষা  করে ও ভাঙ্গা  হাড়  জোড়া লাগতে সাহায্য করে।হাত বা পা মচকে গেলে চুন-হলুদ লাগানোর  কথা তো আমরা  সবাইই জানি এছাড়া কাঁচা  হলুদ বেটে ভাঙ্গা হাড়ের  জায়গায় লাগালে তা  উপকার দেয় দুধে  কাঁচা  হলুদ দিয়ে  খেলেও তা এক্ষেত্রে উপকার দেয়।হাড়ের ক্ষয় ও হাড়ের  গঠনের  মধ্যে সামঞ্জস্য  বজায়  রাখে ও  হাড়কে সুস্থ ও মজবুত রাখে। মেনোপজের সময় মহিলাদের যে হাড়ের ক্ষয় হয় তা থেকেও  কাঁচা হলুদ  বাঁচায়।

২৫।কাঁচা হলুদ আরথ্রাইটিসের হাত থেকে বাঁচতে- হলুদে থাকা কারকিউমিন  নানাভাবে  আরথ্রাইটিসের হাত থেকে আমাদের বাঁচায়। কারকিউমিনের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ বিভিন্ন পেশীর টান জনিত রোগ যেমন আরথ্রাইটিস,অস্টিও-আরথ্রাইটিস, অষ্টিও-পোরোসিস প্রভৃতির প্রদাহ থেকে আমাদের মুক্তি দেয়। পেশী তন্তুর ক্ষয় থেকে রক্ষা করে। ফলে যারা রিউম্যাটয়েড আরথ্রাইটিসে  ভোগেন, দেখা গেছে সাধারণ ফিজিও থেরাপির সাথে তাঁরা  যদি নিয়ম করে কাঁচা হলুদ খান,তাহলে তা  ব্যথা কমায় ও হাড়ের জয়েন্টের মুভমেন্টে  অনেক সাহায্য করে।

 

২৬। কারকিউমিন অ্যানিমিয়া থেকে বাচায়-কাঁচা হলুদের মধ্যে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট গুণ থাকায় তা অ্যানিমিয়া থেকে আমাদের বাঁচায়। মহিলাদের সাধারণত অ্যানিমিয়া হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে, তাই তাদের পক্ষে কাঁচা হলুদ নিয়মক রুপে খাওয়া খুবই উপকারী।এছাড়া কারকিউমিন লোহিত রক্ত কণিকাকে রক্ষা করে। হলুদে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় তা রক্তে আয়রনের ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করে।

২৭। কাঁচা হলুদ মদ্য পান ও তামাক জাত ক্ষতি থেকে বাঁচতে-নিয়মিত মদ্য পানের ফলে যে গ্যাস্ট্রিকের প্রদাহ, মস্তিস্ক ও ফ্যাটিলিভার ডিজিজ হয়, তার থেকে বাঁচতে কাঁচা হলুদ আমাদের সাহায্য করে। দেখা গেছে প্রায় ৭৮.৯% ফ্যাটি লিভার ডিজিজ নিয়ম করে কাঁচা হলুদ খাবার ফলে কমে যায়। ধূমপানের ফলে তামাক ও নিকোটিন আমাদের ফুসফুসের ক্ষতি করে। কাঁচা হলুদে থাকা কারকিউমিন ফুসফুসকে খানিকটা হলে ও ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায় ও ফুসফুসের প্রদাহ হ্রাস করে।


২৮। কাঁচা হলুদ শরীরে ধাতব বিষ ক্রিয়ায়- বিভিন্ন ধাতু দ্বারা আমাদের শরীরে বিষ ক্রিয়া হয়।খনি এলাকায় যে সমস্ত মানুষ বসবাস করেন তাঁদের সিসা, অ্যালুমিনিয়াম, পারদ, ক্যাডমিয়াম থেকে শরীরে বিষ ক্রিয়া হতে পারে, কাঁচা হলুদ নিয়ম করে খেলে এই ধাতব বিষ ক্রিয়া থেকে বাঁচতে সাহায্য করে এছাড়া ত্বক ও খাবারের থেকে অ্যালার্জির প্রবণতা থাকলে তাথেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করতে পারে।


২৯। কাঁচা হলুদ মূত্রনালীর প্রদাহ এবং ওষুধের সাইড ইফেক্ট থেকে বাচাতে- কারকিউমিন মূত্রনালীর সংক্রমণ (Urinary tract infections) থেকে আমাদের বাঁচায়।তাছাড়া কাঁচা হলুদের অ্যান্টি-বায়োটিক ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ মূত্রনালীকে জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা করে। বিভিন্ন পেনকিলার খেলে ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় পাকস্থলী,যকৃত এবং কিডনি ক্ষতিগ্রস্থ হয়  কারকিউমিন তা থেকে আমাদের সুস্থ রাখে।


৩০। কাঁচা হলুদ কোলেস্টেরল কমাতে- যারা কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভুগছেন, নিয়ম করে ওষুধ খেতে হয়, তাঁরা এবার নিয়ম করে কাঁচা হলুদ খেয়ে দেখতে পারেন। উপকার পাবেন। বিভিন্ন  গবেষণায় দেখা গেছে কাঁচা হলুদের কারকিউমিন মাত্র ১২ সপ্তাহেই কোলেস্টেরলকে এক ধাক্কায় অনেকটা কমিয়ে আনতে সক্ষম।

সব আলোচনা শেষে কাঁচা হলুদ ও তার কারকিউমিনের গুণাগুণ আপনার খাদ্য অভ্যাসে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। এর চমৎকার স্বাস্থ্য উপকারিতা জানার পর রান্নায় হলুদ ব্যবহারে উৎসাহ বোধ করুন কাঁচা হলুদের গুড়া/ট্যাবলেট/ ক্যাপসুল সাপ্লিমেন্ট হিসাবে গ্রহন করুন। আল্লাহর এই নিরাময় ও পুষ্টির উপহার নিয়ে আরও সুন্দর ও সুস্থ জীবনের পথে এগিয়ে যান।


কিভাবে খাবেন ? - কাঁচা হলুদের গুড়া/ ক্যাপসুল সাপ্লিমেন্ট


কাঁচা হলুদ এর গুড়ো সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পানির সাথে এক চা চামচ মিশিয়ে এবং রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধের সাথে এক চা চামচ মিশিয়ে খাবেন। যারা এভাবে খেতে পারবেন না তারা  বাজারে ক্যাপসুল সাপ্লিমেন্ট আকারে কিনতে পাওয়া যায় তা কিনে সকালে খালি পেটে একটি-দুইটি ক্যাপসুল ও রাতে একটি-দুইটি ক্যাপসুল পানি বা দুধ দিয়ে খাবেন।
তবে একটি কথা মনে রাখতে হবে কোন কিছুই বেশি খাওয়া উচিৎ নয়। একবার তিন মাস খেয়ে এক/দুই মাস অফ রেখে আবার শুরু করতে পারেন।


এম আখতার উজ জামান DHMS
মোবাইল নং- ০১৯৮৯৯৮৩৬৮০

MD AKHTER UZ ZAMAN DHMS

I am Dr. Akhtar uz Zaman DHMS Homeopathic Consultant. We treat various diseases of the human body. I think it is better to try to keep the body healthy than to cure the disease. It is possible only if we can change our diet to keep our body healthy. And that's why I'm trying this. I hope you will read these articles in "Evergreen Alternative Solutions" blog yourself and share them with your friends. If you like it, please like and comment. Thank you all.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন