আদা-জিনজার-Ginger

 আদা - GINGER

আদা” যাকে ইংরেজিতে বলে “জিনজার” “Ginger, হিন্দিতে বলে “अदरक(Adrak)আদা পৃথিবী জুড়ে ভেষজ ঔষধি গুণাবলী এবং প্রাকৃতিক খনিজ সমৃদ্ধ একটি মশলা যা ভোজন উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর তীক্ষ্ণ স্বাদ এবং সুগন্ধ খাবারের স্বাদ বাড়ায্যি দেয় এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের জন্য পরিচিত। আদা খাদ্যশিল্পে, আচার এ, পানীয় তৈরীতে, ঔষধ তৈরিতে ব্যবহার হয়।এতে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ই এবং বি-কমপ্লেক্স সহ অনেক প্রকার খনিজ উপাদান রয়েছেতবে তার সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করা কঠিন, কারণ এগুলির পরিমাণ আদার প্রজাতি, মাটির গুণাবলী, চাষের পদ্ধতি এবং পরিবেশের উপর নির্ভর করে পরিবর্তনশীল হয়।

 


আদা বিভিন্ন ধরনের খাদ্য উপাদান সমৃদ্ধ যার পুষ্টিগুণ নিম্নরূপ:

প্রোটিন:                            ২.৩%   

শ্বেতসার (কার্বোহাইড্রেট): ১২.৩%

আঁশ (ফাইবার):                  ২.৪%

খনিজ পদার্থ:                     ১.২%

জল:                               ৮০.৮%

এছাড়াও আদা আছে-

ক্যালসিয়াম,

ম্যাগনেসিয়াম,

ফসফরাস,

সিলিকন,

সোডিয়াম,

আয়রন,

দস্তা,

বিটা ক্যারোটিন

ইত্যাদি খনিজ উপাদান ধারণ করেএই উপাদানগুলি দেহের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় এবং উপকারী।মনে রাখতে হবে এই খনিজ উপাদানগুলির সঠিক শতাংশ প্রায়ই পরিবর্তনশীল এবং বিভিন্ন উৎপাদন উৎস অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।

আদা মানবদেহের জন্য যে যে উপকার করে তা নিম্নরূপ:

১। ঠান্ডা দূর করে: আদা চা শীতকালে দেহ উষ্ণ রাখে এবং সর্দি উপশম করে

২। কাঁশি কমাতে সাহায্য করে: আদা গলা চুলকানো দূর করে এবং কাঁশি দূর করে

৩। অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবাল (অনুজীব বিরোধী): আদা সাধারণ সর্দি-কাশি কমাতে এবং প্রদাহ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে

৪। প্রদাহ নিরাময় কারী: আদা প্রদাহ নিরাময়ে সাহায্য করে

৫। পেটফাঁপা ও আমাশয় নিরাময় করে: আদা পেটের মধ্যে থাকা পেশীগুলোকে শিথীল করে এবং আম্লিকভাব কমায় তাই পেটে গ্যাস এবং হজমের সমস্যা দূর করতে উপকারী।

৬। খারাপ ব্যাকটিরিয়া দূর করে: আদা অস্বাস্থ্যকর ব্যাকটিরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে

৭। বমিভাব প্রতিরোধে: আদা বমি বমি ভাব কমাতে সাহায্য করে

৮। কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে: আদা রক্তের কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয়

৯। ডায়াবেটিসের রক্তের সুগার মাত্রা কমাতেঃ আদা যা ইনসুলিনের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং রক্তের সুগার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

১০। লিভার রক্ষা করে: আদা লিভারকে সুরক্ষা দেয়

১১। হার্টের জন্য ভালো: আদা আদা কোলেস্টেরল হ্রাস করে এবং হৃদরোগ প্রতিরোধ করে বা হৃদরোগের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে

১২। পেশী ব্যথায়: আদা পেশীর ব্যথা উপশম করে

আলঝাইমার রোগ থেকে রক্ষা করে: আলঝাইমার রোগ মস্তিষ্কের কোষগুলির ক্ষয় এবং স্মৃতিশক্তি হ্রাসের     সাথে যুক্ত, এবং আদা এর বিভিন্ন উপাদান মস্তিষ্কের কোষগুলির সুরক্ষা দেয় বা নিউরোডিজেনারেটিভ অবস্থার প্রতিরোধ করে এবং স্মৃতিশক্তিকে উন্নকরার  জন্য কাজ করতে পারে

 অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণ: আদা অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, যা ফ্রিরেডিকেল কোষগুলিকে ক্ষতি্র হাত থেকে রক্ষা করে তাই বার্ধক্য কে নিয়ন্ত্রণ করে, চোখের সুরক্ষা করে

১৫। ওজন নিয়ন্ত্রণ এ: প্রতিদিন নিয়ম করে আদা গ্রহণ করলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে

১৬। ডিএনএ রক্ষা করে: আদা ডিএনএ সুরক্ষা দেয়

১৭। ত্বকের যত্নে উপকারিতা: আদা ত্বকের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে

১৮। ক্যান্সার প্রতিরোধ: আদা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে

১৯। চুলের যত্নে উপকারিতা: আদা চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে

২০। উচ্চ রক্তচাপ এঃ আদা এন্টি-অক্সিডেন্ট এবং দাহ-নাশক গুণ সম্পন্ন, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে আদাতে থাকা জিঞ্জেরল নামক উপাদান রক্তনালীর শিথিলকরণে সাহায্য করে, যা রক্তচাপ হ্রাসে ভূমিকা রাখতে পারে

 

প্রতিদিন কতটা কাঁচা তাজা আদা খাওয়া উচিত যাতে স্বাস্থ্য উপকারিতা দেখা যায়, এ বিষয়ে কয়েকজন পুষ্টিবিদ এর মতামত দেয়া হলো:

মাইকেল কোলাঞ্জেলো -  আদা প্রদাহ প্রতিরোধী উপাদান ধারণ করে এবং মাইগ্রেন মাথাব্যথা এবং বমি ভাবের জন্য উপকারী। গর্ভাবস্থায় বা গাড়িতে, প্লেনে চড়ার কারণে বমি ভাবের জন্য প্রায় ১ থেকে ২ গ্রাম গুঁড়ো আদা বা তাজা আদার ১/৪ বা ১/২ ইঞ্চি টুকরো খাওয়াই যথেষ্ট। মাইগ্রেনের জন্য এ পরিমাণ সাধারণত দ্বিগুণ করা হয়।

নোয়া ওয়ারেন - সুস্থ খাদ্যাভ্যাসের অংশ হিসেবে আদা খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। তিনি প্রতিদিন অন্তত ১ চা চামচ গুঁড়ো আদা, ৫ টুকরো কাঁচা আদা এবং ১/৪ কাপ পর্যন্ত খাওয়ার পরামর্শ দেন। আদা স্টির ফ্রাই, ভাজা সবজি, সুপ, চা এবং আরও অনেক খাবারে দারুণ লাগে। আপনি নিজের মতো করে আদা খাওয়ার উপায় অন্বেষণ করতে পারেন

স্টেফানি স্মল - স্বাস্থ্য উপকারিতা দেখার জন্য কতটা আদা খাওয়া উচিত তা নির্ধারণ করা হয়নি। তবে, এফডিএ অনুসারে, প্রতিদিন ৪-৫গ্রাম আদা খাওয়া নিরাপদ

 

এই মতামতগুলি পুষ্টিবিদদের অভিজ্ঞতা এবং গবেষণার ভিত্তিতে দেওয়া তবে, আপনার ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য অবস্থা আদা খাওয়ার পরিমাণ পরিবর্তন হতে পারে। তাই, আদা খাওয়ার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত

 

সবসময় মনে রাখবেন, যে কোনো খাদ্য, খাদ্য উপাদান বা ভেষজ উপাদান গ্রহনের একটি নির্ধারিত মাত্রা থাকে এবং সেই মাত্রা অতিক্রম করলেই তা ক্ষতিকর হয়ে যায়

আদা কিছু কিছু ওষুধের সাথে প্রতিক্রিয়া করতে পারে এবং এটি নিম্নলিখিত ওষুধগুলির সাথে একটু সতর্কতা অবলম্বন করেই খাওয়া উচিত:

রক্ত পাতলা করার ওষুধ: আদা রক্ত পাতলা করার ক্ষমতা রাখে, তাই এটি ওয়ারফারিন (Warfarin) বা অ্যাসপিরিনের মতো অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট ওষুধের সাথে প্রতিক্রিয়া করতে পারে

ডায়াবেটিসের ওষুধ: আদা রক্তের সুগার লেভেল প্রভাবিত করতে পারে, তাই ইনসুলিন বা অন্যান্য ডায়াবেটিস ওষুধের সাথে প্রতিক্রিয়া করতে পারে

হাই ব্লাড প্রেশারের ওষুধ: আদা রক্তচাপ প্রভাবিত করতে পারে, তাই হাই ব্লাড প্রেশারের ওষুধের সাথে প্রতিক্রিয়া করতে পারে

 

মোঃ আখতার উজ জামান ডি এইচ এম এস

মোবাইলঃ ০১৯৮৯৯৮৩৬৮০

MD AKHTER UZ ZAMAN DHMS

I am Dr. Akhtar uz Zaman DHMS Homeopathic Consultant. We treat various diseases of the human body. I think it is better to try to keep the body healthy than to cure the disease. It is possible only if we can change our diet to keep our body healthy. And that's why I'm trying this. I hope you will read these articles in "Evergreen Alternative Solutions" blog yourself and share them with your friends. If you like it, please like and comment. Thank you all.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন