Header Ads Widget

Responsive Advertisement

হিমালয়ান পিংক সল্ট #Himalayan Pink Solt

 পিংক সল্ট বা গোলাপী লবণ এর বেশির ভাগ পাকিস্থানেভারত থেকে চীণের যে প্রসারিত পর্বত শ্রেণী রয়েছে তার মধ্যে পাওয়া যায়।। এর মধ্যে বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বত “হিমালায় পর্বত” ও অন্তভুক্ত আছে। হিমালয় পর্বত শ্রেণী থেকে এই লবণের দেখা পাওয়া যায় বলে একে "হিমালয়ান সল্ট" বলা হয়। এই লবণটি গোলাপী রং-এর হয়ে থাকে। এতে গোলাপী,সাদা এবং লাল রং এর খনিজ উপাদান আয়রন অক্সাইড বিদ্যমান থাকায় এর রং গোলাপী দেখায় এবং সেখানে এটি “হোয়াইট গোল্ড” নামে সুপরিচিত। হিমালয়ান সল্ট পৃথিবীতে পাওয়া সবচেয়ে বিশুদ্ধ লবণ যাতে কোন প্রকার বিষাক্ত ও দূষিত পদার্থ নেই। এ কারণে এ লবণকে “পিংক সল্ট” ও বলা হয়। 

কি ভাবে পিনফক সল্ট আহরন ও প্রসেস করা হয় - 

                                                       


হিমালয়ান সল্ট এ কি কি আছেঃ- 
হিমালয়ান সল্ট ৮০+ খনিজ নিয়ে গঠিত যা পৃথিবীর মধ্যে প্রাকৃতিক ভাবে পাওয়া যায়। এতে ৮৫% থাকে সোডিয়াম ক্লোরাইড আর ১৪% থাকে সালফেট, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস, কপার, জিংক, সেলেনিয়াম, আয়োডিন,খাবার সোডা, বরিক অ্যাসিডের সল্ট, স্ট্রনশিয়াম এবং ফ্লোরাইড মত খনিজ পদার্থ।এই লবণের খনিজ উপাদানগুলো আঠালো গঠনে থাকে এবং মানুষের শরীরের কোষে খুব সহজেই শোষিত হতে পারে। 
আমরা যদি এটিকে একটি চার্ট এ দেখি তাহলে বুজতে আরো বেশি সুবিধা হবে-

উপাদান

সী সল্ট (%)

হিমালীয়ান সল্ট (%)

সোডিয়াম ক্লোরাইড

৯৮-৯৯%

৯৬-৯৮%

ম্যাগনেশিয়াম

০.০১-০.৫%

০.০১-০.৫%

ক্যালসিয়াম

০.০১-০.৫%

০.০১-০.৫%

পটাশিয়াম

০.০১-০.৫%

০.০১-০.৫%

আয়রন

নেই

০.০০৪%

ক্যালসিয়াম (Ca)

নেই

আছে

ম্যাগনেশিয়াম (Mg)

নেই

আছে

সালফার (S)

নেই

আছে

জিঙ্ক (Zn)

নেই

আছে

ভ্যানাডিয়াম (V)

নেই

আছে

ক্রোমিয়াম (Cr)

নেই

আছে

ম্যাঙ্গানিজ (Mn)

নেই

আছে

কপার (Cu)

নেই

আছে

সেলেনিয়াম (Se)

নেই

আছে

মোলিবডেনাম(Mo)

নেই

আছে

আয়োডিন(I)

নেই

আছে

ফসফরাস(P)

নেই

আছে

সিলিকন(Si)

নেই

আছে

ফ্লোরাইড(F)

নেই

আছে


"আছে" লিখা যেই উপাদান বা খনিজ গুলির প্রতিটির শতাংশ হিমালীয়ান সল্টের মোট ওজনের একটি খুব ছোট অংশ হয়ে থাকে যেটি এই খনিজগুলির পরিমাণ খননের স্থান এবং লবণের ব্যাচের উপর নির্ভর করে পরিবর্তনশীল হতে পারে এবং প্রায়ই পরিমাপের জন্য অত্যন্ত ক্ষুদ্র। এই খনিজগুলির প্রতিটির পরিমাণ সাধারণত মিলিগ্রাম বা মাইক্রোগ্রামে পরিমাপ করা হয়।  

[ ফিটকিরি কি ? ফিটকিরির বিভিন্ন ব্যবহার-  পড়তে ক্লিক করুন ]


এবার আসুন জেনে নেই হিমালয়ান সল্ট এর স্বাস্থ্য উপকারীতা -
     


১। শরীরের তরলের ভারসাম্য রক্ষা করে-

হিমালয়ান পিংক সল্টে বিভিন্ন ধরণের ইলেক্ট্রোলাইট থাকে যা শরীরের আর্দ্রতানিয়ন্ত্রণ করে।  শরীরের কোষগুলোর কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন হওয়ার জন্য শরীরের আর্দ্রতা বজায় থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। মানবদেহে অত্যন্ত জরুরি দু’টি উপাদান লবন এবং জল। কিন্তু তা পরিমিত মাত্রায় হলে তবেই স্বাস্থ্য সম্মত হয়। আমরা সাধারণত খাবারে বা রান্নার সময় যে নুন ব্যবহার করি তা পরিশ্রুত নুন। অর্থাত্‍ প্রায় বিশুদ্ধ সোডিয়াম ক্লোরাইড। প্রাকৃতিক নুন থেকে সমস্ত মিনারেল ছেঁটে ফেলে দেওয়া হয় এই প্রক্রিয়ায়। অথচ এই প্রাকৃতিক মিনারেল আমাদের শরীরের পক্ষে অত্যন্ত দরকারি।




তা হলে কী ভাবে আমরা ঘাটতি পূরণ করব? উত্তর একটাই। প্রাকৃতিক লবন থেকেই একমাত্র এই মিনারেল সংগ্রহ করে। হিমালয়ান সল্ট এর জন্য বিশেষভাবে সমাদৃত। শুধু এ দেশেই নয়, বিদেশেও বহু মানুষ এই নুন মিশ্রিত জল খেয়ে উপকার পেয়েছেন এবং পাচ্ছেন। সকালে খালিপেটে এই জলের উপকারিতা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু এটা বানানোর একটা পদ্ধতি রয়েছে। দেখে নিন কী ভাবে বানাবেন এই লবন-জল।ক।একটি পরিষ্কার কাঁচের জারে ফোটানো ঠান্ডা করা জল নিন।
এবার তাতে বেশ খানিকটা হিমালয়ান লবন ঢেলে দিন। ২৪ ঘণ্টা রেখে দিন।                                    
যখন দেখবেন আর লবন জলে দ্রবীভূত হচ্ছে না তখন বুঝবেন আপনার সলিউশনটি প্রাথমিকভাবে তৈরি হয়েছে।
পড়ে থাকা লবন ছেঁকে লবন-জল ভরা জারটি ফ্রিজে রেখে দিন।

কিভাবে এই পানি তৈরী করবেন ভিডিও দেখে নিতে পারেন-

প্রতি দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খালিপেটে জার থেকে এক চামচ জল নিয়ে তা এক গ্লাস পরিষ্কার জলে মেশান। এই জল ‘SOLE’ (সোলে) নামে পরিচিত। এক উপকারিতা জানলে অবাক হতে হয়।

১) শরীরে জলের মাত্রা বজায় রাখে।
২) কোষে PH মাত্রা বজায় রাখে।
৩) রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৪) শ্বাসকষ্টের সমস্যা দূর করে।
৫) সাইনাসের সমস্যা কমিয়ে দেয়।
৬) মাসল ক্র্যাম্প কমায়।
৭) শরীরে বিভিন্ন জয়েন্ট বা গাঁট-কে সুস্থ রাখে।
৮) হাঁড় ভালো রাখে।
৯) ঘুম ভালো হয়।
১০) হজমশক্তি বাড়ে।
১১) যৌন ক্ষমতা বাড়ায়।
১২) মুখের দুর্গন্ধ দূর করে,দাঁত ভালো রাখে।
১৩) বলিরেখা কমায়।
১৪) শরীর থেকে টক্সিন বার করে।
১৫) এনার্জিতে ভরপুর রাখে।

২। শরীরকে বিষমুক্ত হতে সাহায্য করে-
হিমালয়ান সল্ট গোসলের পানিতে ব্যবহার করলে শরীরের কোষগুলো পুনরুজ্জীবিত ও বিষমুক্ত হয়। এই লবণের খনিজ উপাদানগুলো পানিতে স্থানান্তরিত হয়। তাই যখন এই পানি দিয়ে গোসল করা হয় তখন শরীরের কোষ ও রক্তস্রোত থেকে বিষাক্ত পদার্থ বাহির হয়ে যায়।
৩। পরিপাক নালীকে পরিষ্কার করে-
প্রাকৃতিকভাবে পরিপাক নালীকে পরিষ্কার হতে সাহায্য করে পিংক সল্ট। এটি জোলাপ হিসেবে কাজ করে এবং পরিপাক তন্ত্রের জমে থাকা টক্সিনকে বর্জ্য পদার্থ হিসেবে বাহির হয়ে যাওয়ার জন্য সাহায্য করে।
৪। শরীরের pH  এর ভারসাম্য রক্ষা করে-
হিমালয়ান সল্ট শরীরের ক্ষারীয় অবস্থা বজায় থাকতে সাহায্য করে। এটি দেহের তরলের হাইড্রোজেন আয়নের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। সীসা, মার্কারি ও আর্সেনিকের মত ভারী ধাতু শরীর থেকে বাহির করে দিতে সাহায্য করে।

৫। শ্বাসতন্ত্রের রোগ থেকে মুক্তি দেয়-
সাইনুসাইটিস, অ্যাজমা, ব্রংকাইটিস বা অ্যালার্জি থেকে নিরাময়ে সাহায্য করে হিমালয়ান সল্ট। শ্বসনতন্ত্রকে পরিষ্কার হতে ও ক্ষতিকর পদার্থ বাহির হয়ে যেতে সাহায্য করে। এই লবণের অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান অতিরিক্ত মিউকাসকে নরম ও আলগা হতে সাহায্য করে এবং মিউকোসিলিয়ারি পরিবহণের গতি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এই লবণের উপাদানগুলো ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে ক্ষতিগ্রস্থ টিস্যুকে নিরাময়ে সাহায্য করে। গরম পানিতে পিংক সল্ট দিয়ে এর ভাপ নিন।   
৬। ওজন কমায়:
এই লবণ দেহে ডাইজেস্টিভ জুস উৎপন্ন করে। যা খুব তাড়াতাড়ি খাবার হজম হতে সাহায্য করে। ফলে কমে অতিরিক্ত ওজন।

৭। ত্বকের সমস্যা কমায়:
ত্বকে এগজিমা বা চুলকানির সমস্যা থাকলে সি সল্ট বাথ নিতে পারেন। এই লবণ ত্বকের ছিদ্রগুলো খুলে দেয়, রক্ত সঞ্চালন ভাল করে এবং ত্বকের টিস্যুগুলো হাইড্রেট করতে সাহায্য করে।

৮। হৃদপিণ্ড:
হিমালয়া লবন রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ফলে রক্তচাপ কমে এবং ভাল থাকে হার্ট।এতে স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমে।

৯। অবসাদ:
এই লবণ দেহে সেরোটোনিন এবং মেলাটোনিন নামের দু’টি হরমোন ক্ষরণ করে। যা অবসাদ ও দুঃশ্চিন্তা কাটাতে সাহায্য করে।

১০। পেশী সুস্থ রাখে:
সুস্থ থাকতে পেশীর প্রয়োজন পটাশিয়াম। যা এই লবণে থাকে। ফলে পেশী সুস্থ থাকার পাশাপাশি মাসল পেইন, পেশি টান বা খিঁচ ধরাও কমায় এই লবণ।
এই লবণ মিশ্রিত কুসুম গরম পানিতে কাপড় ভিজিয়ে ব্যাথার স্থানে সেঁক দিন,ব্যথা কমে যাবে।

মোঃ আখতার উজ জামান ডিএইচএমএস
মোবাইলঃ-০১৯৮৯৯৮৩৬৮০
=============================

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ