আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার
(Apple Cider Vinegar with Mother)
ভিনেগার অর্থ টক মদ।
আপেল, চিনি বা ইথানলকে গাজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এসিটিক এসিডে (CH3COOH) পরিণত করা হয় মদ কিংবা আপেলের রস দিয়ে উৎপন্ন এলকোহল, ফলের রস ইত্যাদি তরল পদার্থ সহযোগে ভিনেগারতৈরীতে ব্যবহার করা হয় উক্ত তরলে ইথানল দ্রবীভূত হয়ে ভিনেগারে রূপান্তরিত করে নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করেও এটি প্রস্তুত হয়।
ভিনেগারে বিভিন্ন রকমের ফলমূল যেমন: আপেল, আঁখ, নারিকেল, খেজুর, নাশপাতি, টমেটো; শস্যহিসেবে চাউল, গম সহ মধু দিয়ে প্রস্তুত করা হয় এ সকল ফল বা শস্যের নামানুসারে ভিনেগারের নামকরণ করা হয়েথাকে অধিকাংশ ফলের ভিনেগার ইউরোপ, কোরিয়া, চীনে প্রস্তুত করা হয় স্বতন্ত্র ফল দিয়ে প্রস্তুত এ সকল ভিনেগার উচ্চ মূল্যে বাজারে বিক্রয়ের করা হয় এছাড়াও আরো অনেক ফল দিয়ে ভিনেগার প্রস্তুত করে থাকে।
আধুনিক রন্ধন প্রক্রিয়ায় আপেল সিডার ভিনেগার একটি অন্যতম উপাদান এর রয়েছে অসাধারণ স্বাস্থ্যকরীগুণ মজার ব্যাপার হচ্ছে রান্নার কাজ ছাড়াও রূপপচর্চা, গৃহস্থালির নানা কাজে আপেল সিডার ভিনেগারের বহুমুখী ব্যবহার হয়ে থাকে এর মধ্যে জিনিসপত্র পরিষ্কার, চুল ধোয়া, খাবার সংরক্ষণ এব ত্বকের উন্নয়নে এটি চমৎকার কাজ করে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি, সালাদ, স্যুপ, সস, গরম পানীয় এবং অন্যান্য কাজেও আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহ্রত হয়।
আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করে চমৎকার ফলাফল পাওয়া যায় কিছু উপকারিতা পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
আপেল সিডার ভিনেগারে যে খাদ্যমান পাওয়া যায় তা নিম্নরুপ –
১. রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ: আপেল সিডার ভিনেগার ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে কিছু গবেষ-ণায় বলা হয়েছে, উচ্চ শর্করা যুক্ত খাবার গ্রহণের পর আপেল সিডার ভিনেগার খেলে৩৪ শতাংশ ইনসুলিন সংবেদনশীলতার উন্নয়ন করে এবং রক্তে শর্করার পরিমাণ পর্যাপ্ত কমায় তবে আপনযদি ডায়াবেটিসের ওষুধ খান তাহলে আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার আগে অবশ্য চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
২. পেট পরিপূর্ণ রাখে: ওজন নিয়ন্ত্রণে অনেক সময় আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয় কারণ এটি খেলে ক্ষুধা কম লাগে কিছু সংক্ষিপ্ত গবেষণায় বলা হয়েছে, আপেল সিডার ভিনেগার কম ক্যালোরিগ্রহণ, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং পেটের চর্বি কমায়।
৩. খাবার সংরক্ষণ:অন্যান্য ভিনেগারের মতো আপেল সিডার ভিনেগারও খাবার সংরক্ষণে চমৎকারকাজ করে আচার তৈরি এবং খাবার সংরক্ষণে মানুষ হাজার বছর ধরে ভিনেগার ব্যবহার করে আসছে খাবারে অ্যাসিড বাড়াতে কাজ করে আপেল সিডার ভিনেগার আর এটি খাবারের এনজাইম নিষ্ক্রিয় করে এবং খারপব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে। এর ফলে খাবার পচে না।
৪. দুর্গন্ধনাশক: আপেল সিডার ভিনেগার ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী উপাদানের কারণে সুপরিচিত এই কারণে দাবি করা হয়ে থাকে, দুর্গন্ধ দূর করতে আপেল সিডার ভিনেগার চমৎকার কাজ করে তবে এইদাবির পক্ষে কোনো গবেষণা নেই আপনি চাইলে পানির সঙ্গে আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে ডিওডরেন্ট স্প্রে তৈরি করে দেখতে পারেনচ দুর্গন্ধ দূরকারী প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে আপেল সিডার ভিনেগারের বেশ সুনাম রয়েছে।
৫. সালাদ তৈরি: সহজ উপায়ে ঘরে সালাদ তৈরি করতে চাইলে আপেল সিডার ভিনেগার একটি ভালো উপাদান, এটি সালাদের স্বাদ বাড়াতেও সাহায্য করে।
৬. ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়: আপেল সিডার ভিনেগার ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়- বিভিন্ন গবেষণায় প্রায়শই এমন দাবি করা হয়ে থাকে পরীক্ষাগারের গবেষণায় দেখানো হয়েছে,ক্যানসারের কোষ হত্যায়ভিনেগার কাজ করে কিছু পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণায় বলা হয়েছে,খাদ্যনালীর ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে আপেল সিডার ভিনেগার কাজ করে তবে এসব গবেষণার কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়নি।
৭. পরিষ্কারক: আপেল সিডার ভিনেগার প্রাকৃতিক পরিষ্কারক হিসেবে বেশ জনপ্রিয় এর কারণ হচ্ছে,এর ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী উপাদান এক কাপ পানির সঙ্গে আধা কাপ পেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে নিন এই মিশ্রণটি দিয়ে আপনি সব ধরনের পরিষ্কার করার কাজে ব্যবহার করতে পারবেন।
৮. গলার স্বর ঠিক রাখতে:গলার স্বর ভেঙ্গে গেলে তা ঠিক করতে আপেল সিডার ভিনেগারের ব্যবহার একটি জনপ্রিয় ঘরোয়া পদ্ধতিমনে করা হয়, এটি অ্যান্টি ব্যকটেরিয়া, যার দ্বারা গলায় সমস্য তৈরি করা ব্যকটেরিয়াগুলোকে ধ্বংস করা যায় তবে এর পক্ষে কোন শক্ত প্রমান নেইতবে আপনি যদি এটি ব্যবহার করতে চান তাহলে কুলকুচি করার আগে অবশ্যই পানি মিশিয়ে নিবেন কারণ আপেলসিডার ভিনেগার এক ধরণের অ্যাসিড তাই পানি না মেশালে গলা পুড়ে যেতে পারে।
৯. ত্বক পরিচর্যার ক্ষেত্রে: আপেল সিডার ভিনেগার ত্বক মসৃণ করতে সাহায্য করে এবং ব্রণসহ চামড়ার যে কোনো সমস্যা দূর করেএছাড়া বয়সের ছাপ কমিয়ে আনতে এটি অত্যন্ত কার্যকরি এ কারণে অনেকেই ত্বক পরিচর্যার ক্ষেত্রে আপেল সিডার ভিনেগার ব্যব-হার করে তিন ভাগের দুইভাগ পানি এবং একভাগ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে তুলা দিয়ে হালকা করে মুখে ব্যবহার করতে হয় কিন্তু যদি কারো ত্বক বেশি সংবেদনশীল হয় তাহলে পানির পরিমাণ একটু বাড়িয়ে দিতে হবে।
১০. ঘরের কিটপতঙ্গ মারার ফাঁদ হিসেবে: আপেল সিডার ভিনেগার ঘরের কিট পতঙ্গ মারার ফাঁদহিসেবে খুব সহজে ব্যবহার করা যায় একটি কাপে আপেল সিডার ভিনেগার ঢালুন এবং তাতে কয়েকফোটা বাসন পরিস্কার করার সাবান মিশিয়ে দিন,এরপর এটাতে পোকা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই মারা যাবে।
১১. ডিম ভালোভাবে সিদ্ধ করতে: ডিম সিদ্ধ করার সময়ে পানিতে একটু আপেল সিডার ভিনেগার মিশয়ে দিলে তাহলে ডিম খুব দ্রুত ভালোভাবে সিদ্ধ হবে কারণ, ডিমের সাদা প্রোটিনে ভিনেগারের অ্যাসিডের কারণে তেজস্ক্রিয়তা তৈরি করে এবং তা ভালোভাবে সিদ্ধ হতে সাহায্য করে এছাড়া ডিম সাদা রাখতে এবং ভাজার সময় হালকা ভিনে-গার ব্যবহার করলে তা আরো সুন্দর হয়।
১২. খাবার সুস্বাদু করতে: এছাড়া খাবার সুস্বাদু করতে রান্নার সময় আপেল ভিনেগার ব্যবহার করা হয় মাংসের স্টেককে আরো সুস্বাদু করতে এটি জনপ্রিয় উপাদান এটি মাংসেচমৎকার মিষ্টি এবং টক স্বাদ তৈরি করে,এছাড়া স্টেককে আরো সুস্বাদু গন্ধ দিতে আপেল ভিনেগারের সাথে ওয়াইন ভিনেগার, রসুন, সয়াসস, পেঁয়াজ এবং গোলমরিচ মেশানো যেতে পারে।
১৩. ফলমূল বিষমুক্ত করতে: কিনে আনা ফলমূলে কীটনাশক পদার্থ থাকতে পারে এছাড়া ফরমালিনের মতো বিষাক্ত পদার্থও থাকতে পারে এজন্য অনেকে এসব ফলমূল বা শাকসবজি বিষমুক্ত করতে আপেল সিডার ভিনেগার দিয়ে ধৌত করে,যদিও এটি ফলমূলকে পুরোপুরি বিষমুক্ত করতে পারে না তবে শুধু পানি দিয়ে ধৌত করার চেয়ে এটি অধিক কাজ দেয় ছাড়া খাবারের বিপজ্জনক ব্যাকটেরিয়া দূর করে আপেল সিডার ভিনেগারউদাহরণ স্বরূপ, ভিনেগার দিয়ে ধৌত করা খাবার থেকে ইকোলি এবং সালমোনেলার মত বিপদজনক ব্যাকটেরিয়া দূর হয়েছে।
১৪. দাঁত পরিষ্কার করতে: আপনি দাঁত পরিষ্কার করতেও আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করতে পারেন, এটি দাঁত এ জমে থাকা দাগ ও হলদে ভাব দূর করে সাথে মুখে জমে থাকা অনুজীব দূর করে থাকে,যদিও দাঁত পরিষ্কারের সেরা পদ্ধতির বিষয়ে দ্বীমত রয়েছে মনে করা হয়, আপেল সিডার ভিনেগার দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করলে অন্য সব দাঁত পরিষ্কারের উপাদান থেকে মুখের ভিতরে কম ক্ষতি হয়।
১৫. গোসলের সময়: যে কারণে মানুষ আপেল সিডার ভিনেগার মুখের ত্বকচর্চায় ব্যবহারকরে ঠিক একই কারণে এটি গোসলের সময়ও ব্যবহার করা যায় ত্বক মসৃন ও সমস্যামুক্ত রাখতে আপেল সিডার ভিনেগার অত্যন্ত কার্যকরি,আপনি গোসলের জলের ভিতর ১/২ কাপ আপেল সিডার ভিনেগার ঢেলে দিন এবং গোসল করুন এতে আপনার শরীরের ত্বক অত্যন্ত ভালো থাকবে।
১৬. চুলের যত্নে: আপেল সিডার ভিনেগার চুলের যত্মেও ব্যবহার করা যায় এটি দিয়ে চুল ধুলে চুল পড়া বন্ধ হয় এবং চুল লম্বা হয় ও উজ্জল দেখায়,দুই ভাগের একভাগ পানি এবং একভাগ ভিনেগার ভালোভাবে মিশীয়ে চুলে দিয়ে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন আর যদি আপনার মাথার ত্বক সংবেদনশীল হয় তাহলে ভিনেগারেরমধ্যে বেশি করে পানি মিশিয়ে নিন। কারণ এটি অ্যাসিড যুক্ত।
ব্যাবহারের নিয়ম-
ক। প্রথমে ২ টেবিল চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার এবং সমান পরিমান পানি নিন।
খ। পারলে এতে (Tea tree oil)চা গাছের তেল ১০ থেকে ১৫ ফোটা দিন।(এই Teatree oil সুপার সপ গুলোতে পাবেন)
ক। প্রথমে ২ টেবিল চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার এবং সমান পরিমান পানি নিন।
খ। পারলে এতে (Tea tree oil)চা গাছের তেল ১০ থেকে ১৫ ফোটা দিন।(এই Teatree oil সুপার সপ গুলোতে পাবেন)
গ।এরপর মাথার স্ক্যাল্পে এই মিশ্রণটি ৫ মিনিট ধরে হাত দিয়ে ম্যাসেজ করুন এবং আরো ৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।
ঘ।এরপর চুল ধুয়ে ফেলুন এবং যথারীতি শ্যাম্পু করুন,সপ্তাহে এভাবে ২ থেকে ৩ বার ব্যাবহার করুন।
এরপর দেখুন খুশকি থাকে কিনা।
১৮. সস হিসেবে: সস হিসেবে আপেল সিডার ভিনেগার হতে পারে আপনার খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে দেয়ার অন্যতম উপাদান, টমেটো সসের সাথে অল্প করে ভিনেগার মেশালে এটি খাবারকে আরো স্বাদযুক্ত করে দেয়।
ঘ।এরপর চুল ধুয়ে ফেলুন এবং যথারীতি শ্যাম্পু করুন,সপ্তাহে এভাবে ২ থেকে ৩ বার ব্যাবহার করুন।
এরপর দেখুন খুশকি থাকে কিনা।
১৯. স্যুপের মধ্যে: স্যুপের মধ্যে আপেল সিডার ভিনেগার দেয়া যেতে পারে,এতে স্যুপেরস্বাদ আরো কয়েক গুণ বেড়ে যায় যদি ঘরে তৈরি স্যুপের স্বাদ আরো বাড়িয়ে নিতে চান তাহলে রান্নার শেষের দিকে অল্প করেভিনেগার মিশিয়ে দিন।
২০. আগাছা বিনাশ করার জন্য: আপেল সিডার ভিনেগার দিয়ে ঘরেই তৈরি করতে পারেন আগাছা বিনাশ করার ঔষধ এরপর এটি বাড়ির বাগানের আগাছার উপর স্প্রে করে দিলে সেগুলো মরে যাবে,এছাড়া এর মধ্যে সাবান ও লেবুর রস মেশালে তা আরো কার্যকরী হবে।
২১. ঘরে কেক ও ক্যান্ডি তৈরি করতে:ঘরে কেক ও ক্যান্ডি তৈরি করার সময় এর স্বাদ ও ঘ্রাণ বাড়িয়ে তুলতে আপেল সিডার ভিনে-গার ব্যহার করা যায়, এটি ঘরে তৈরি এসব জিনিসকে আলাদা স্বাদ প্রদান করে।
২২. ব্যতিক্রমী গরম পানীয় তৈরি করতে: একটি ব্যতিক্রমী গরম পানীয় তৈরি করতে ১২ আউন্স (৩৫৫ মিলি) গরম পানিতে আপেল সিডার ভিনেগার ২ টেবিল চামচ, দারুচিনি ১ চা চামচ, ১ চামচ মধু এবং ২ টেবিল চামচ লেবুর রস দিতে হবে।এর স্বাদ অসাধারণ।
২৩. মুখ পরিষ্কারের জন্য:
আপেল ভিনেগারকে মুখ পরিষ্কার করার জন্য কার্যকরী উপাদান হিসেবে মনে করা হয় এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান মুখের শ্বাসের গন্ধ দূর করে,যদি আপনি এটা করতে চান তাহলে অবশ্যই তা পানির সাথে মিশিয়ে নিবেন,এক কাপ বা ২৪০ মিলি পানির সাথে এক টেবিল চামচ ভিনেগার নিতে পারেন,সরাসরিভিনেগার মুখের ভিতর ব্যবহার করলে দাঁত নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
২৭.বার্ধক্যজনিত দাগ কিংবা রিঙ্কেলসঃ এই সময়ের অন্যতম আলচ্য বিষয়। আমাদের দেশের আবহাওয়ার কারনে হোক অথবা ত্বকের পরিমিত পরিচর্যা কিংবা পুষ্টির অভাবে হোক, বয়স ৩০ এর পরপরই আমাদের দেশের তথা এই উপমহাদেশের মেয়েদের ত্বকে বয়স্ক একটা ছাপ পড়ে যদিও অনেকেই হন্য হয়ে ছুটেন প্রসাধনীর পেছনে। বিন্দুমাত্র ধারনা ছাড়াই সেই সব প্রসাধনী যা কিনা কেবলমাত্র কেমিকেল ছাড়া কিছুই নয় যেমন পযারাবেন্স, বিউটাডিন, ইথিলিন,লেড ইত্যাদি। যা হয়ত স্বল্প সময়ের জন্য আপনার ত্বকে তারুন্য আনার চেস্টা করে এবং ব্যবহার বন্ধের পরপরই আবার পূর্বের রুপ ধারন করে আর এইসবের মাত্রাতিরিক্ত ব্যাবহারই আজকাল স্কিন ক্যান্সার এর এই ভয়াবহ রুপ। তাই এখনও সময় আছে আসুন প্রাকৃতিক এবং দির্ঘস্থায়ী সমাধানে আপনি বার্ধক্যে পড়বেন না সেটা বলবোনা, অন্তত পক্ষে এতটুকু নিশ্চয়তাআছে যে বয়সের আগে বুড়ো হবেন না।তা চেহারায় হোক কিংবা কর্মক্ষমতায়, পান করুন কিংবা স্কিন টোনার হিসেবে ব্যাবহার করুন।পার্থক্যটা বুজবেন ব্যাবহারেই।
৪। মাদারটা কি খাওয়া/পান করা ঠিক হবে?
মাদার মিক্সার বা মাদার এটি সবচেয়ে নিউট্রিসাস পার্ট যেটি অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখবেন তলানিতে জমে থাকে। তাই ব্যাবহারের পুর্বে ঝাকিয়ে নেয়া উচিত তখন যদি আপনি পান করেন সেটা অনেক কার্যকরি হবে।
৫। অ্যাপেল সিডার ভিনেগারটা কি ফ্রিজে রাখা জরুরী ?
না,এটি ফ্রিজে রাখা জরুরী নয়। সরাসরি সূর্যালোক থেকে দূরে ঠাণ্ডা জায়গায় রাখুন।
৮। অতিরিক্ত খেলে কি ক্ষতি হবে?
আসলে সত্যি বলতে এটা একটি এসিড তাই যে কোন জিনিস আপনি পরিমানের চাইতে বেশি খেলে তা আপনার ক্ষতি করতেই পারে। ভাত বেশি খেলে কি ক্ষতি হয় না ? তারপরও আপনারা ভিনেগার মিশ্রণ দিনে ০৩ বার নিলে এর ফলাফল নিজেই উপলব্ধি করতে পারবেন।মিশ্রণ টা হলো ১/২ চা চামচ থেকে ০৩ টেবিল চা চামুচ “র” অ্যাপেল সিডার ভিনেগার এর সাথে ০১থেকে ২চা চামুচ খাটি মধু /লেবুর রস এক গ্লাস বিশুদ্ধ পানিতে মিক্স করে খাওয়া উচিৎ।
৯। এই অ্যাপেল সিডার ভিনেগার এর সাথে মধু নেয়া টা কি বাঞ্ছনীয় ?
অনেকেই প্রশ্ন করেছেন যে এই অ্যাপেল সিডার ভিনেগার এর সাথে মধু নেয়া টা কি বাঞ্ছনীয় কিনা!একদম ই বাঞ্ছনীয় নয়। তবে মধুর ও নিজস্য অনেক হেলথ বেনিফিট আছে।যার ফলে খাটি বাংলায় বলতে সোনায় সোহাগা বলতে পারেন পানি মধু এবং ভিনেগার এর মিশ্রনটিকে। কিন্তু পানি এবং অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের মিশ্রণ ই যথেষ্ট।কারন মধু ছাড়াই অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের হেলথ বেনিফিট অনেক।
১০। পানি না মিশিয়ে খাওয়া কি ঠিক হবে?
না,পানি না মিশিয়ে খাওয়াটা একদমই ঠিক হবে না।কারন এই অ্যাপেল সিডার ভিনেগার শরীরের অভ্যন্তরে স্পঞ্জ হিসেবে কাজ করে এবং পানির মিশ্রণ বিভিন্ন বিষ ক্রিয়া দূর করে।‘র’ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার আপনার অস্বস্তির কারন হয়ে দাড়াতে পারে এবং এভাবে সেবন করাটা একদমই ঠিক না।
১১।অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহারে শরীরের ভিতরের এবং বাইরের বেনিফিট টা কি?
বলা হয় নিয়মিত একটা আপেল খেলে আপনি ডাক্তার থেকে দূরে থাকতে পারবেন।পৃথিবীর আদি ফল গুলোর মাঝে আপেলের পুষ্টিগুণ অনেক বেশী।পটাসিয়ামে ভরপুর এই উপাদান টি আমাদের দ্রুত বয়সের ছাপ ফেলতে দেয়না।ক্যালশিয়াম আমাদের হাড়ের খয় রোধ করে টা মজবুত করতে সাহায্য করে।পটাসিয়ামে শরীরের সফট টিস্যু গুলো সুসংহত রাখতে সাহায্য করে।এতে আপেল এর সব গুনাগুনের পাশাপাশি ফারমেন্টেশনের ফলে অ্যাপল সিডার ভিনেগারে অ্যাসিটিক,সাইট্রিক ও ম্যালিক অ্যাসিড, ভিটামিন, এনজাইম, খনিজ সল্ট এবং অ্যামিনো অ্যাসিড ,এসব উপাদানের এক অভুতপুর্ব মিশ্রণ তৈরি হয়।এই অ্যাপেল সিডার ভিনেগার বডি টক্সিন দূর করে। দেহে একটি সতেজ অবস্থা নিয়ে আসে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কয়েকগুন বাড়িয়ে দেয়।
অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত তিন বেলা অ্যাপেল সিডার ভিনেগার সেবন করেন তাদের postprandial (after-meal) glucose level বা খাবার পর গ্লুকোজ লেভেল ৩৪% কম থাকে।এটার কারন হচ্ছে কাররো-হাইড্রেট এর ব্লাড এ absorption কমিয়ে দেয়। সাথে সাথে স্টার্চ থেকে সুগার এর কনভার্সন রেট কমিয়ে দেয়।আমরা ব্লাড সুগার কমানোর জন্য Alpha-Glucosidase Inhibitors নিয়ে থাকি ঠিক এই ঔষধ এর বিকল্প হিশাবে কাজ করে প্রাকৃতিক অ্যাপেল সিডার ভিনেগার।আপনাদের সুবিধার্থে মেডিকেল জার্নাল এর মুল কথাটি উল্লেখ করে দিলাম।
তাছাড়া BBC এর সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত অ্যাপেল সিডার ভিনেগার সেবনে ব্লাড গ্লুকোজ এবং কোলেস্টেরল লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকে নাটকীয় ভাবে যা অনেক ঔষধ সেবনে ও দুরসাধ্য ব্যপার।
২৪.মুখের দুর্গন্ধ (Badbreath) : ইংরেজীতে একটি কথা আছে- "I don’t want to hear any secret if you have bad breath” অর্থ দাঁড়ায় আমি কোন ধরনের গোপন কথাজানতে চাইনা,যদি তোমার মুখে গন্ধ থাকে যাই হোক এই সমস্যা টা এতটাই ভয়াবহ যে কেউ আপনাকে মুখ ফুটে বলবে না কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে আপনাকে এড়িয়ে চলবে,বহুজাতিক কোম্পানীর পেস্ট কিংবা টুথ পাউডার কোম্পানী গুলো যা আশ্বাস দেয় মুখের গন্ধ দূর করার খেত্রে তা নিতান্তাতই সাময়ীক,কারন শরীরের অভ্যন্তরের কিছু ব্যাকটেরিয়া এটার জন্য দায়ী যা কখন ও পেষ্ট কিংবা পাউডার এ দূর হবেনা। এই জায়গাটায় অ্যাপেল সিডার ভিনেগার চমৎকার কাজ করে।প্রতিদিন সকালে পানি এবং অ্যাপেল সিডার ভিনেগার এর মিশ্রন পান করুন এর এন্টিব্যক্টেরিয়াল প্রোপার্টি দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যক্টেরিয়া নির্মুল করেএবং মুখের দুর্গন্ধ দুর করে।
২৫.পা থেকে দুর্গন্ধ বা Smelly feet.
সহজ সমাধান : আপনার পা দুটিকে ভিনেগার মিশ্রিত পানি দিয়ে পেপার টাউয়েল দিয়ে স্ক্রাব করুন।এর এন্টিব্যক্টেরিয়াল প্রোপার্টি দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যক্টেরিয়া নির্মুল করবে এবং পা থেকে দুর্গন্ধ বা smelly Feet থেকে মুক্তি দেবে।
২৬.ফেসিয়াল টোনার হিসেবে ব্যাবহার : ২ কাপ পানিতে এক টেবিলচামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার দিন। এতে সুতি কাপড় ভিজিয়ে তা মুখে লাগান, শুকিয়ে টানটান না হওয়া পর্যন্ত ধুয়ে ফেলবেন না।
২৭.বার্ধক্যজনিত দাগ কিংবা রিঙ্কেলসঃ এই সময়ের অন্যতম আলচ্য বিষয়। আমাদের দেশের আবহাওয়ার কারনে হোক অথবা ত্বকের পরিমিত পরিচর্যা কিংবা পুষ্টির অভাবে হোক, বয়স ৩০ এর পরপরই আমাদের দেশের তথা এই উপমহাদেশের মেয়েদের ত্বকে বয়স্ক একটা ছাপ পড়ে যদিও অনেকেই হন্য হয়ে ছুটেন প্রসাধনীর পেছনে। বিন্দুমাত্র ধারনা ছাড়াই সেই সব প্রসাধনী যা কিনা কেবলমাত্র কেমিকেল ছাড়া কিছুই নয় যেমন পযারাবেন্স, বিউটাডিন, ইথিলিন,লেড ইত্যাদি। যা হয়ত স্বল্প সময়ের জন্য আপনার ত্বকে তারুন্য আনার চেস্টা করে এবং ব্যবহার বন্ধের পরপরই আবার পূর্বের রুপ ধারন করে আর এইসবের মাত্রাতিরিক্ত ব্যাবহারই আজকাল স্কিন ক্যান্সার এর এই ভয়াবহ রুপ। তাই এখনও সময় আছে আসুন প্রাকৃতিক এবং দির্ঘস্থায়ী সমাধানে আপনি বার্ধক্যে পড়বেন না সেটা বলবোনা, অন্তত পক্ষে এতটুকু নিশ্চয়তাআছে যে বয়সের আগে বুড়ো হবেন না।তা চেহারায় হোক কিংবা কর্মক্ষমতায়, পান করুন কিংবা স্কিন টোনার হিসেবে ব্যাবহার করুন।পার্থক্যটা বুজবেন ব্যাবহারেই।
২৮. দাঁত পরিষ্কারের ব্রাশ পরিষ্কার করতে: আমরা দাঁত পরিষ্কার করার জন্য ব্রাশ ব্যবহার করি।কিন্তু কিছুদিন ব্যবহারের পর ব্রাশের ভিতরে অপরিষ্কার হয়ে যায় তখন এ ব্রাশ পরিষ্কারের জন্য আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করা যায় ঘরে বসে টুথব্রাশ ক্লিনার যেভাবে বানাবেন-১২০ মিলি পানি,০২ টেবিল চামচ ভিনেগার এবং দুই টেবিল চামচ বেকিং সোডা ভালোভাবে মেশালেই এটি তৈরি হয়ে যাবে।
২৯. ব্রণ দূর করতে: অ্যাপেল সিডার ভিনেগার এর আন্টিব্যাক্টেরিয়াল প্রভাব প্রাকৃতিক টোনার হিসেবে কাজ করে। যা মুখে ব্রণের বৃদ্ধি কমিয়ে আনে এবং ব্রণ দূরীকরণে সাহায্য করে এর এসিড মুখের পি এইচ এর মাত্রা ঠিক রাখে এবং অন্যান্য দাগ দূর করতে সহায়তা করে।বর্তমান বিশ্বে Acne বা ব্রন নিয়ে যে কয়েকটি সমাধান রয়েছে,এর মধ্যে অ্যাপেল সিডার ভিনেগারই সম্ভবত সবচেয়ে দ্রুত Acne বা ব্রন দূর করে।ব্রন দূর করার প্রায় ১০০ টি ঘরোয়া সমাধান আছে যেমন ধরুন ক্যামোমিলা,ঘৃতকুমারী, লেবুর রস, এমন কি অ্যাসপিরিন তবে মজার বিষয় হচ্ছে সম্পুর্ন কার্যকারি-তায় এ গুলো আসলেই একটা প্রশ্নবিদ্ধ ব্যপার।অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের ম্যালিক এসিড এবং ল্যাক্টিক এসিড খুব দ্রুত ব্রন দূর করতে সাহায্য করে। তবে অনুপাত টা হতে হবে সঠিক।১ চা চামচ পানি এবং ১ চা চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার নিয়ে মিক্স করে টোনার তৈরি করুন এবং তা স্কীনে ব্যবহার করুন।অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ব্যাবহারের পুর্বে বোতলটি ভালভাবে ঝাকিয়ে নিবেন।
৩০.ব্ল্যাকহেডসঃ খুবই বিরক্তিকর একটা সমস্যা।অনেকে যা করেন নাক চেপে এটা দূর করতে চান। দয়া করে এটা করবেন না।আজ আমরা ত্বকের এই কমন সমস্যা নিয়ে খুবই অসাধারন একটা সমাধান দিব আপনাদের।আশা করি প্রতি মাসের বিউটি পার্লারে, কিংবা জেন্টস সেলুনে দৌড়াদৌড়ি থেকে মুক্তি পাবেন।
প্রথমে ২ টেবিল চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার প্রায় এক গ্লাস পানিতে নিয়ে একটা টোনার তৈরি করুন।এবার টোনার এবং খাটি মধু মিক্স করে নাকের পূরো অংশে হাতের দুটো আঙ্গুল দিয়ে circular way তে বা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে অ্যাপ্লাই করুন, তিন মিনিট রাখুন এর পর কুসুম গরম পানি দিয়ে তুলা ভিজিয়ে পরিষ্কার করুন।ফলাফল আপনি নিজেই দেখতে পারবেন।
৩১. আঁচিল দুর করতে: আঁচিল দুর করতে কাজ করে আপেল সিডার ভিনেগার।প্রাকৃতিক ভাবে আঁচিল দূর করতে ভিনেগারের অ্যাসিড খুব কার্যকরী। তবে এ পদ্ধতিতে আঁচিল দূর করা খুব কষ্ট দায়ক। তাই আঁচিল দূর করার ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করতে চাইলে খুব সাবধানে করতে হবে তার পরও যদি না হয় তবে ভালো কোন হোমিও ডাক্তার এর সাহায্য নিতে হবে।হতোবা বলবেন অপারেশন করে ফেলে দিলেইতো হয় না তাহলে তা আবার হবে।
৩২. প্রাকৃতিক ডিওডোরেন্ট হিসেবে: নিজেকে আকর্ষণীয় করতে তুলতে নানা রকম সুগন্ধী ব্যবহৃত হয়। তবে বাড়িতেই খুব ভালো প্রাকৃতিক সুগন্ধী বা ডিওডোরেন্ট তৈরি করা যায়। যার মূল উপাদানই হলো আপেল সিডার ভিনেগার।
৩৩. বাসন পরিষ্কারক হিসেবে: বাসার থালা বাসন আরো ভালোভাবে পরিষ্কার এবং এর ব্যাকটেরিয়া দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী আপেল সিডার ভিনেগার। বাসন পরিষ্কার করা সাবানের সাথে একটু ভিনেগার মিশিয়ে নিলেই এমন উপকার পাওয়া যায়।
৩৪. মশা মাছি থেকে পরিত্রাণ পেতে: দুইভাগের একভাগে পানি এবং এক ভাগে আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে সারা ঘরে স্প্রে করলে মশা মাছি দূরে থাকবে। এবং পরিবেশ সুন্দর রাখবে।আপেল সিডার ভিনেগার ঘরোয়া কাজের ক্ষেত্রে একটি বহুল ব্যবহৃত উপাদান।এটি ঘরে থাকলে অনেক সমস্যার খুব দ্রুত সমাধান করা যায়।
৩৫.হেঁচকি থেকে মুক্তি পেতে: এক চা চামচ আপেল সিডার ভিনেগার খেয়ে ফেলুন। এর টক স্বাদ হেঁচকি বন্ধ করবে।
৩৬.গলাব্যথা দূর করতে:গলাটা খুব খুসখুস করছে? তাহলে ১/৪ কাপ কুসুম গরম পানিতে ১/৪ কাপ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে এক ঘণ্টা পর পর কুলকুচা করলে উপশম পাওয়া যাবে।
৩৭.বদহজম প্রতিরোধে: যে খাবারগুলো গ্রহণের পরে আপনার কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তা খাওয়ার আগে এক চুমুক আপেল সিডার খেয়ে নিনপ্রাচীন এই পন্থানুসরণ করতে পারেন- এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক চা-চামচ মধু আর এক চা-চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে খাবারের আধা ঘণ্টা আগে খেয়ে নিলে বদহজম থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
৩৮। অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার শরীরের লিভার ভালো রাখে এবং অ্যালার্জি প্রতিরোধ করে।
**************************
এবার আসি আপনাদের কথায়। সাধারণত যে সব প্রশ্ন আপনারা করে থাকেন সেগুলো হলো-
১। এই ন্যচারাল অ্যাপেল সিডার ভিনেগারটা কি ?
ন্যাচারাল কথাটির সাথে এর উত্তরটা অনেকাংশে দেয়া আছে।কারন এটি রিকটিফাইড এবং ডিস্টিল্ড ভিনেগার নয় যেটি আপনি সাধারন মার্কেট এ পাবেন এবং অনেক কম দামে।এই ন্যচারাল অ্যাপেল সিডার ভিনেগার তৈরি হয় আপেল ফার্মের ফ্রেশ ন্যাচারালি বড় হওয়া আপেল থেকে।পরে যেগুলো কে ক্রাশড করা হয় এবং কাঠের ব্যারেলে ম্যাচিউর করা হয় যার ফলে ফারমেন্টেশন বা গাজন প্রক্রিয়াটা খুব হাই স্ট্যান্ডার্ড হয়।এর পর সেটি যখন আঠালো রূপে দেখা যায় এবং মুল উপাদান মাদার তৈরি হয় সাথে ব্রাউন কালারের লিকুইড হয়, তখন তৈরি হয় ন্যচারাল অ্যাপেল সিডার ভিনেগার। চলুন ভিডিও দেখে নেই-
২।বোতলের গায়ে যে “WITH MOTHER” কথাটি লিখা থাকে,এটা কি এবং কেন লিখা থাকে?এটার অর্থ হচ্ছে এই অ্যাপেল সিডার ভিনেগারটাতে মাদার প্রোডাক্ট রয়েছে।অ্যাপেল সিডার ভিনেগারে মাদার হচ্ছে দুটি পদার্থের মিশ্রন।একটি হছে পেক্টিন এবং আরেকটি হচ্ছে আপেল রেসিডিউ বা ফারমেন্টেশন বা গাজন পরবর্তী আপেলের বাকি অংশ।এখন বলি পেক্টিন কি?পেক্টিন হচ্ছে হেটারো পলিস্যাকারাইড যা কেবলমাত্র আপেল, বেরি এসব ফলে পাওয়া যায়।এবং ফারমে -ন্টেশন মাদ্ধ্যমে তা একত্রীকরণ করা হয়। যেটাই মাদারের মুল উপাদান।এবং মজার বিষয় হচ্ছে যখন এটা বাণিজ্যিক ভাবে ওভার প্রোসেস ফিল্টারেশন এবং হিট দেয়া হয় তখন এই মাদারটি আর থাকেনা।ফলশ্রুতিতে এর কার্জকারিতাও থাকে না।
৩। অ্যাপেল সিডার ভিনেগারটা পাস্তুরাইসড নয় কেন?
দেখুন পাস্তুরাইজেশন প্রসেস টা কি সেটা আগে জানতে হবে।এটা এক ধরনের হিটিং প্রসেস যার মুল উদ্দেশ্য হচ্ছে দুধ কিংবা জুছ জাতীয়পন্যগুলকে কিভাবে ব্যাকটেরিয়া মুক্ত করা যায় তবেঅধিকাংশ ক্ষেত্রে যা দেখা যায় তা হল এই প্রসেস এর মদ্ধ্য দিয়ে গেলে খাদ্যগুণ নেমে যায় প্রায় অর্ধেক এর বেশি।এজন্য পুষ্টিবিধরা জুছ এবং দুধ জাতীয় পন্য গুলো ফ্রেশ রিকমেন্ড করেন।যাই হোক পাস্তুরাইজেশন প্রসেস এর পর মাদার এর কার্যকারিতা সম্পুর্নরূপে নষ্ট হয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে এর ভিনেগার এর কার্জকারিতা ও থাকেনা।
৪। মাদারটা কি খাওয়া/পান করা ঠিক হবে?
মাদার মিক্সার বা মাদার এটি সবচেয়ে নিউট্রিসাস পার্ট যেটি অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখবেন তলানিতে জমে থাকে। তাই ব্যাবহারের পুর্বে ঝাকিয়ে নেয়া উচিত তখন যদি আপনি পান করেন সেটা অনেক কার্যকরি হবে।
৫। অ্যাপেল সিডার ভিনেগারটা কি ফ্রিজে রাখা জরুরী ?
না,এটি ফ্রিজে রাখা জরুরী নয়। সরাসরি সূর্যালোক থেকে দূরে ঠাণ্ডা জায়গায় রাখুন।
৬। এর স্থায়িত্বকাল কতটুকু ?
আপনি এটাকে অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারবেন যদি সূর্যালোক থেকে দূরে তুলনামূলক ঠাণ্ডা জায়গায় রাখেন।
৭।প্রেগনেন্ট বা গর্ভবতী মহিলারা কি অ্যাপেল সিডার ভিনেগার সেবন করতে পারবেন? বা নিরাপদ কিনা?
অ্যাপেল সিডার ভিনেগার গর্ভবতী মহিলারা প্রেগনেন্সি প্রিয়ড এবং এর পরবর্তী সময় এই দুই সমেয়ই নির্দিধায় স্বল্প মাত্রায় সেবন করতে পারবেন।কারন এটি বডি টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে,হজম শক্তি বাড়িয়ে দেয় ।
অ্যাপেল সিডার ভিনেগার গর্ভবতী মহিলারা প্রেগনেন্সি প্রিয়ড এবং এর পরবর্তী সময় এই দুই সমেয়ই নির্দিধায় স্বল্প মাত্রায় সেবন করতে পারবেন।কারন এটি বডি টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে,হজম শক্তি বাড়িয়ে দেয় ।
৮। অতিরিক্ত খেলে কি ক্ষতি হবে?
আসলে সত্যি বলতে এটা একটি এসিড তাই যে কোন জিনিস আপনি পরিমানের চাইতে বেশি খেলে তা আপনার ক্ষতি করতেই পারে। ভাত বেশি খেলে কি ক্ষতি হয় না ? তারপরও আপনারা ভিনেগার মিশ্রণ দিনে ০৩ বার নিলে এর ফলাফল নিজেই উপলব্ধি করতে পারবেন।মিশ্রণ টা হলো ১/২ চা চামচ থেকে ০৩ টেবিল চা চামুচ “র” অ্যাপেল সিডার ভিনেগার এর সাথে ০১থেকে ২চা চামুচ খাটি মধু /লেবুর রস এক গ্লাস বিশুদ্ধ পানিতে মিক্স করে খাওয়া উচিৎ।
৯। এই অ্যাপেল সিডার ভিনেগার এর সাথে মধু নেয়া টা কি বাঞ্ছনীয় ?
অনেকেই প্রশ্ন করেছেন যে এই অ্যাপেল সিডার ভিনেগার এর সাথে মধু নেয়া টা কি বাঞ্ছনীয় কিনা!একদম ই বাঞ্ছনীয় নয়। তবে মধুর ও নিজস্য অনেক হেলথ বেনিফিট আছে।যার ফলে খাটি বাংলায় বলতে সোনায় সোহাগা বলতে পারেন পানি মধু এবং ভিনেগার এর মিশ্রনটিকে। কিন্তু পানি এবং অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের মিশ্রণ ই যথেষ্ট।কারন মধু ছাড়াই অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের হেলথ বেনিফিট অনেক।
১০। পানি না মিশিয়ে খাওয়া কি ঠিক হবে?
না,পানি না মিশিয়ে খাওয়াটা একদমই ঠিক হবে না।কারন এই অ্যাপেল সিডার ভিনেগার শরীরের অভ্যন্তরে স্পঞ্জ হিসেবে কাজ করে এবং পানির মিশ্রণ বিভিন্ন বিষ ক্রিয়া দূর করে।‘র’ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার আপনার অস্বস্তির কারন হয়ে দাড়াতে পারে এবং এভাবে সেবন করাটা একদমই ঠিক না।
১১।অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহারে শরীরের ভিতরের এবং বাইরের বেনিফিট টা কি?
বলা হয় নিয়মিত একটা আপেল খেলে আপনি ডাক্তার থেকে দূরে থাকতে পারবেন।পৃথিবীর আদি ফল গুলোর মাঝে আপেলের পুষ্টিগুণ অনেক বেশী।পটাসিয়ামে ভরপুর এই উপাদান টি আমাদের দ্রুত বয়সের ছাপ ফেলতে দেয়না।ক্যালশিয়াম আমাদের হাড়ের খয় রোধ করে টা মজবুত করতে সাহায্য করে।পটাসিয়ামে শরীরের সফট টিস্যু গুলো সুসংহত রাখতে সাহায্য করে।এতে আপেল এর সব গুনাগুনের পাশাপাশি ফারমেন্টেশনের ফলে অ্যাপল সিডার ভিনেগারে অ্যাসিটিক,সাইট্রিক ও ম্যালিক অ্যাসিড, ভিটামিন, এনজাইম, খনিজ সল্ট এবং অ্যামিনো অ্যাসিড ,এসব উপাদানের এক অভুতপুর্ব মিশ্রণ তৈরি হয়।এই অ্যাপেল সিডার ভিনেগার বডি টক্সিন দূর করে। দেহে একটি সতেজ অবস্থা নিয়ে আসে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কয়েকগুন বাড়িয়ে দেয়।
অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত তিন বেলা অ্যাপেল সিডার ভিনেগার সেবন করেন তাদের postprandial (after-meal) glucose level বা খাবার পর গ্লুকোজ লেভেল ৩৪% কম থাকে।এটার কারন হচ্ছে কাররো-হাইড্রেট এর ব্লাড এ absorption কমিয়ে দেয়। সাথে সাথে স্টার্চ থেকে সুগার এর কনভার্সন রেট কমিয়ে দেয়।আমরা ব্লাড সুগার কমানোর জন্য Alpha-Glucosidase Inhibitors নিয়ে থাকি ঠিক এই ঔষধ এর বিকল্প হিশাবে কাজ করে প্রাকৃতিক অ্যাপেল সিডার ভিনেগার।আপনাদের সুবিধার্থে মেডিকেল জার্নাল এর মুল কথাটি উল্লেখ করে দিলাম।
Pretty amazing that a simple apple cider vinegar (acetic acid) could have the benefits of three different classes of diabetes drugs, and all for two cents a dose! It’s likely good for both Type 2 and Type 1, especially for lowering postprandial glucose. And postprandial glucose levels account for 30% to 70% of A1C values.
তাছাড়া BBC এর সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত অ্যাপেল সিডার ভিনেগার সেবনে ব্লাড গ্লুকোজ এবং কোলেস্টেরল লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকে নাটকীয় ভাবে যা অনেক ঔষধ সেবনে ও দুরসাধ্য ব্যপার।
পৃথিবীর বেশ কয়েকটি মেডিকেল জার্নাল অনুযায়ী টাইপ ২ ডায়াবেটিক রোগী যারা আছেন বিশেষ করে যাদের ইন্স্যুলিন নিতে হয় না তাদের জন্য রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস পানির সাথে ২ টেবিল চামচ ভিনেগার সেবনে সকালে গ্লুকোজ লেভেল থাকে অনেক কম।
আপনাদের সুবিধার্থে মেডিকেল জার্নাল গুলোর লিংক দিয়ে দেয়া হল স্বাস্থ্য আপনার,সিদ্ধান্ত্য আপনার।
বাজারে কিনতে পাওয়া যায় অনেক ব্রান্ডের আপেল সিডার ভিনেগার যা বর্তমানে অনেক দামে কিনতে হয়, তাই আসুন নিজেরাই চেস্টা করি কি করে বানিয়ে নেয়া যায় খাঁটি আপেল সিডার ভিনেগার উইথ মাদার-
ক্লিক করুন এই নিচের এই ভিডিওতে - https://www.youtube.com/watch?v=4GbhWSA3MzA
ক্লিক করুন এই নিচের এই ভিডিওতে - https://www.youtube.com/watch?v=4GbhWSA3MzA
ভিনেগার বানাতে গিয়ে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারেন তার সমাধান দেখুন পান নাকি - ক্লিক করুন এই নিচের এই ভিডিওতে-
ধন্যবাদ। সাথে থাকুন। শেয়ার করে সবাইকে দেখার ও জানার সুযোগ করে দিন।